১.থাইরয়েড এবং পিসিওএসে অশ্বগন্ধা: নিয়মিত এই প্রকৃতিক উপাদানটি
খাওয়া শুরু করলে এমন ধরনের শারীরিক সমস্যার প্রকোপ কমতে একেবারেই সময় লাগে না। কারণ
অশ্বোগন্ধার রস শরীরে প্রবেশ করার পর থাইরয়েড
হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে রোগের প্রকোপ কমতে সময়ই লাগে না। তবে যাদের হাসিমোটো থাইরডিটিস আছে তাদের ডাক্তারের পরামর্শে
অশ্বগন্ধা ব্যবহার করতে হবে। আরেকটা জিনিষ হল,
থাইরয়েডে
অনেকের ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা উপকারী আবার
অনেকের সমস্যা হয়। পিসিওএস ও হরমোনাল সমস্যা, তাই বোঝা ই
যাচ্ছে অশ্বগন্ধা উপকারী । অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা
যাদের আছে তারা অশ্বগন্ধা খেয়ে দেখতে পারেন।
২.ডায়াবেটিস রোগকে দূরে রাখে: একাদিক গবেষণায়
দেখা গেছে এই গুল্মটির শরীরে এমন কিছু অজানা উপাদান
রয়েছে, যা
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে দারুনভাবে
কাজে আসে। তাই যাদের পরিবারে ডায়াবেটিস রোগের ইতিহাস
রয়েছে, তারা
এই ঘরোয়া চিকিৎসার সাহায্য নিয়ে দেখতে পারেন।
৩.স্ট্রেস কমায়: অশ্বগন্ধায়
উপস্থিত অ্যান্টি-স্ট্রেস প্রপাটিজ নিমেষে মানসিক চাপকে কমিয়ে ফেলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, নিয়মিত এই মহৌষধিটি গ্রহণ করলে মস্তিষ্কের সার্বিক কর্মক্ষমতাও চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়।
৪.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
দেহের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাকে শক্তপোক্ত করে তুলতে দারুনভাবে সাহায্য করে থাকে। আর ইমিউনিটি যখন
একবার বেড়ে যায়, তখন ছোট-বড় কোনও রোগের পক্ষেই ক্ষতিসাধণ করা সম্ভব হয় না। প্রসঙ্গত,
অশ্বগন্ধায়
প্রচুর মাত্রায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ফলে এই প্রকৃতিক উপাদানটি প্রতিদিন খেলে সংক্রমণ সহ একাধিক রোগ নিয়ে কোনও চিন্তাই
থাকে না। শুধু তাই নয়, গবেষণায় দেখা
গেছে অশ্বগন্ধায় উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে
শ্বেত এবং লহিত রক্ত কণিকার মাত্রা বাড়ানোর পাশাপাশি প্লেটলেটের
সংখ্যার বৃদ্ধি ঘটাতেও সাহায্য করে। সেই কারণেই তো এই গুল্মটি ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসাতেও এতটা কাজে আসে।
৫.রক্তাল্পতা দূর করে: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত অশ্বাগন্ধার
রস খাওয়া শুরু করলে শরীরের অন্দরে লহিত এবং
শ্বেত রক্ত কণিকার উৎপাদন বেড়ে যায়। ফলে রক্তাল্পতার মতো সমস্যা দ্রুত কমে যায়।
৬.অ্যাংজাইটির প্রকোপ কমায়: বেনারেস হিন্দু ইউনিভার্সিটির গবেষকদের করা এক
গবেষণায় দেখা গেছে অশ্বগন্ধার
অন্দরে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা অ্যাংজাইটি কমানোর পাশাপাশি ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে হতাশা,
দুঃচিন্তা
আর মানষিক চাপের অবসান ঘটে। যার কারনে অস্বাবাবিক হারে মনযোগ বৃদ্ধি পেতে থাকে। মনোযোগ বাড়ানোর জন্য অশ্বগন্ধা ম্যাজিকের মত কাজ করে থাকে।
৭.ক্যান্সার প্রতিরোধক: ক্যান্সার প্রতিরোধক
হিসাবে দারুনভাবে সাহায্য করতে পারে অশ্বগন্ধা। কারণ
গবেষণা বলছে, এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,
যা
ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়া যেমন আটকায়, তেমনি কেমোথেরাপির
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৮.খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়: এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত অ্যান্ট-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
একদিকে যেমন
রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, তেমনি অন্যদিকে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিও বিশেষ ভূমিকা নেয়। এক কথায়
হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতে অশ্বগন্ধার কোনও বিকল্প হয়
না বললেই চলে।
৯.টেস্টোস্টেরন
বাড়াতে: অশ্বগন্ধা টেস্টোস্টেরন
বাড়াতে এবং ছেলেদের ফার্টিলিটি বাড়াতে সাহায্য করে। মাসল বিল্ড করতে
টেস্টোস্টেরন খুবই জরুরী একটা হরমোন। তাই যারা মাসল বিল্ড
করতে
চায় তাদের জন্য অশ্বগন্ধা যথেষ্ট উপকারী বলা চলে। এছাড়া অশ্বগন্ধা মনোবল, সহনশীলতা,
শক্তি
এবং পেশী বাড়াতে সাহায্য করে। একই ভাবে বডি কম্পোজিশন ইমপ্রুভ করতে অশ্বগন্ধা
সাহায্য করে।
১০.স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধিতেঃ স্ট্রেস এবং অতিরিক্ত মাত্রায় ইলেকট্রনিক
ডিভাইস ব্যবহারের কারণে অধিকাংশ পুরুষেরই স্পার্ম কাউন্ট
কমছে। ফলে বাড়ছে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এই
প্রকৃতিক উপাদানটি গ্রহণ করলে স্পার্ম
কাউন্ট চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে বাবা হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যাই হয় না।
উপরের সব গুনাবলী শুনে বোঝাই যাচ্ছে
অশ্বগন্ধা খুবই উপকারী ভেষজ উদ্ভিদ। সব ধরনের আয়ুর্বেদিক ওষুধে অশ্বগন্ধার ব্যবহার
লক্ষনীয়।
তবে সবার জন্য অশ্বগন্ধা নয়।
Ä গর্ভবতী কেউ অশ্বগন্ধা নিতে পারবেনা। অশ্বগন্ধা গর্ভপাতের ঝুকি
বাড়ায়।
Ä যারা ব্রেস্টফিডিং করায় তারাও অশ্বগন্ধা নিতে পারবেনা।
Ä অশ্বগন্ধা
যেহেতু ব্লাড সুগার লেভেল আর রক্ত চাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই
এসবের মেডিকেশন চললে তা এডজাষ্ট করতে হতে পারে।
অর্থ্যাৎ মেডিকেশনের ডোজ কমাতে
হবে।
Ä থাইরয়েডের টা তো উপরেই বলেছি। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে সমস্যা
হতে পারে।
Ä এছাড়া জটিল কোন মেডিকেল প্রবলেম থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের
পরামর্শ নেয়া উচিৎ।
যেখানে পাবেন......
যে কোন আয়ুর্বেদিক বা ভেষজ দোকানেই পাবেন। বা যে কোন কবিরাজি দোকানে।
ক্যাপসুল হলে রাতে ঘুমানোর আগে ১ টা।
চূর্ণ বা পাউডার হলে ১/২ চা চামচ দিয়ে শুরু করবেন,
পরে ১ চা চামচ নিবেন। লিকুইড হলে ১ চা চামচ।
বেস্ট রেজাল্ট পেতে দুধের সাথে মিশিয়ে
খেতে পারেন। অথবা পানিতে ঘুলেও খেতে পারেন।
উপরের কোন তথ্য মেডিকেল এডভাইস হিসেবে নিতে নিষেধ করা হল। নিজ
দায়িত্বে তথ্য যাচাই করে নিজের উপর প্রয়োগ করবেন। আপনার
কোন প্রকার ক্ষয়ক্ষতির জন্য লেখক দায়ী
থাকবেনা

0 Comments